ডেইলি নরসিংদী ২৪ : নরসিংদীর রায়পুরায় সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে ফিরোজা বেগম (২৬) নামে এক গৃহবধূকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে স্বামী বশির মিয়ার (৪৫) বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার (৭ জানুয়ারি) দুপুরে জেলার রায়পুরা উপজেলার মহেষপুর ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে। বসতঘরের ভেতরেই সিলিং ফ্যানের সাথে ঝুলিয়ে ওই গৃহবধূকে হত্যা করা হয়েছে বলে অভিযোগ ফিরোজা বেগমের বাবার বাড়ির লোকজনের।
তবে ঘটনার পর থেকে অভিযুক্ত স্বামী বশির মিয়াসহ তার স্বজনরা পলাতক রয়েছে। নিহত ফিরোজা বেগম উপজেলার আদিয়াবাদ ইউনিয়নের হারিসুল হক ভেন্ডারের মেয়ে।
ফিরোজার ভাই ওবাইদুল হক জানান, প্রায় ১৪ বছর আগে ফিরোজার সাথে মহেষপুর ইউনিয়নের হাফিজ উদ্দিনের ছেলে বশির মিয়ার বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকেই যৌতুকের জন্য প্রায়ই ফিরোজাকে অত্যাচার করা হত। দাম্পত্য জীবনে তাদের ঘরে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। বর্তমানে সেই মেয়ে ষষ্ঠ শ্রেণির ছাত্রী।
এরই মধ্যে ফিরোজার স্বামী বশির মিয়া রায়পুরা ইউনিয়নের রাজপ্রসাদ গ্রামের প্রবাসী শন্তুর মিয়ার স্ত্রী সালমার সাথে পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে যান। একপর্যায়ে স্ত্রী ফিরোজা সব ঘটনা জানতে পেরে প্রতিবাদ করলে তার ওপর অমানবিক নির্যাতন চালায় বশির। এ নিয়ে ফিরোজার বাবার বাড়ির পরিবার ও শ্বশুরবাড়ির লোকজনের মধ্যে একাধিকবার সালিশ হলেও বশিরের চরিত্রের কোনো পরিবর্তন হয়নি বলেও অভিযোগ নিহতের পারিবারের।
ফিরোজার স্বজনরা জানান, বশির ব্যবসার নাম করে ২ বছর আগে ফিরোজার বাবার কাছ থেকে ২ লাখ টাকা নিয়ে একটি বয়লার মুরগির ফার্ম দেয়। ঘটনার আগের দিনও বশির মিয়ার কাছে ওই টাকা ফেরত চান ফিরোজার পরিবারের লোকজন। সেই সময় বশির টাকা না নেওয়ার কথা জানিয়ে উল্টো ফিরোজাকে মেরে লাশ গুম করে ফেলার হুমকি দেন।
এ ঘটনার পরদিন বৃহস্পতিবার বিকালে স্থানীয়দের মাধ্যমে ফিরোজার মৃত্যুর খবর পায় তার পরিবারের লোকজন। ঘটনাটির সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন নিহত ফিরোজার পরিবার।
লাশ উদ্ধারের সত্যতা স্বীকার করে রায়পুরা থানার উপ-পরিদর্শক ওয়াহাব বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে ওই গৃহবধূ আত্মহত্যা করেছেন। তবে সুরতহাল শেষে নিহতের লাশ ময়না তদন্তের জন্য নরসিংদী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট হাতে পেলে ওই গৃহবধূর মৃত্যুর সঠিক তথ্য জানা যাবে বলেও জানিয়েছেন পুলিশের এই কর্মকর্তা।
Leave a Reply